All Bangla News

দেশে ফেরার ইঙ্গিত দিলেন তারেক রহমান

abn
abn
বিবিসি বাংলার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান/ ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘ প্রায় দুই দশক পর কোনো গণমাধ্যমে মুখোমুখি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে তিনি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে নিজের দেশে ফেরা, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে দলের কৌশল, আওয়ামী লীগের রাজনীতি, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এবং দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে বিস্তারিত মতামত প্রকাশ করেছেন।

দেশে ফেরা নিয়ে তারেকের বক্তব্য

গণঅভ্যুত্থানের পর বিএনপি চেয়ারপারসনের ছেলে ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দেশে ফেরার প্রশ্নে তারেক রহমান বলেন, “কিছু সংগত কারণে হয়তো ফেরাটা এখনো হয়নি। তবে সময় তো চলে এসেছে মনে হয়। ইনশাআল্লাহ দ্রুতই ফিরে আসবো।”

দেশে ফেরার সম্ভাব্য সময় জানতে চাইলে তিনি বলেন, “দ্রুতই মনে হয়, ইনশাআল্লাহ। নির্বাচনের আগেই দেশে ফেরার ইচ্ছা রয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী। যেখানে জনগণের প্রত্যাশিত নির্বাচন হবে, সেখানে আমি জনগণের সঙ্গে থাকবো—জনগণের মাঝেই থাকবো ইনশাআল্লাহ।”

দেশে ফেরার পথে নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে প্রশ্নে তারেক রহমান জানান, সরকারের বিভিন্ন মহল থেকেও তিনি নানাবিধ শঙ্কার কথা শুনেছেন, তবে তিনি সেই ভয়কে বড় করে দেখছেন না।

চাঁদাবাজি ও দখলদারি অভিযোগ প্রসঙ্গে

৫ আগস্টের পর বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ওঠা চাঁদাবাজি ও দখলদারি অভিযোগ বিষয়ে তারেক রহমান বলেন, “আমরা প্রায় সাত হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছি, তবে সবাই এসব অভিযোগে জড়িত নয়। অনেক বিষয়ই ভিন্ন সাংগঠনিক কারণে।”

তিনি জানান, অভিযোগগুলো তদন্তের পর দেখা গেছে অনেক অভিযোগই পারিবারিক বা সম্পত্তিগত বিরোধ থেকে সৃষ্ট। “অনেক সময় এক ভাই আরেক ভাইয়ের সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে। একজন বিএনপি করার কারণে অভিযোগ উঠেছে যে সে দখল করেছে। আবার অনেক সময় আমাদের নেতাকর্মীরা নিজেদের বৈধ সম্পত্তি ফিরে পেতে গেলে সেটিকেও ‘দখল’ বলে প্রচার করা হয়েছে।”

তারেক রহমান স্বীকার করেন, কিছু অনিয়ম সত্যিই ঘটেছে, তবে দল তা তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। “আমরা রাজনৈতিক দল, পুলিশ না। যারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে, তাদের কাজটি তারা সঠিকভাবে করছে না—এটাই আমাদের প্রশ্ন।”

সরকারের ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ অবস্থান

দখলদারি বা চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতা আছে কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “অবশ্যই আছে। রাজনৈতিক দলের কাজ নয় পুলিশিং করা; এটি সরকারের দায়িত্ব।”

বিএনপি ভবিষ্যতে সরকার গঠন করলে দলীয় শৃঙ্খলা ও আইনের প্রতি কড়া অবস্থান নেওয়া হবে জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, “বিএনপি ইনশাআল্লাহ সরকার গঠন করলে দলের কোনো নেতাকর্মী যদি অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়ায়, দল তার পক্ষে থাকবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্বাধীনভাবে কাজ করবে।”

আওয়ামী লীগ ও জামায়াত প্রসঙ্গে

বিবিসির প্রশ্নে তারেক রহমান বলেন, “বিগত ১৭ বছরে যারা গুম-খুন করেছে, তাদের জবাব তাদেরই দিতে হবে। আবার ১৯৭১ সালে যারা বিতর্কিত ভূমিকা রেখেছে, তাদের জবাব তারাও দেবেন। আমি আমার কাজের জবাব দেব, অন্যেরটা আমি দিতে পারবো না।”

বহুদলীয় রাজনীতিতে বিশ্বাস

বিএনপি সবসময় বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, “দেশের আইন ও সংবিধানের ভেতরে থেকে সবাই রাজনীতি করার অধিকার রাখে। আমরা চাই সবাই রাজনীতি করুক। বিএনপি বিশ্বাস করে—বহুদলীয় রাজনীতিই দেশের জন্য সর্বোত্তম পথ।”