All Bangla News

রমেকে অ্যানথ্রাক্সে রোগীর মৃত্যু, চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ

abn
abn
রমেকে অ্যানথ্রাক্সে রোগীর মৃত্যু, চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রমেক) অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়ার চার ঘণ্টার মধ্যেই মারা গেছেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রোজিনা বেগম (৪৫)। স্বজনদের অভিযোগ, চিকিৎসা না পেয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

গত শনিবার বিকেল পাঁচটার দিকে রমেক হাসপাতালে ভর্তি হন রোজিনা বেগম। রাত ৯টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের দাবি, হাসপাতালে ভর্তি করার পরও চিকিৎসক ও নার্সরা অ্যানথ্রাক্সের ভয়ে তাঁর কাছে যাননি।

রোজিনার ছেলে রইসুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, “মেডিকেলে কোনো চিকিৎসা ছিল না। ডাক্তার ও নার্সরা রোগীর কাছে আসতে ভয় পেয়েছেন। তাঁরা বলেন, অন্য ডাক্তারকে দেখান। অক্সিজেন নিতে ২০০ টাকা দিতে হয়েছে, নেবুলাইজার মাস্কের জন্যও টাকা দিতে হয়েছে। টাকা ছাড়া কেউ একটা কথাও বলে না।”

তিনি আরও জানান, চিকিৎসা না পেয়ে তাঁরা রোগীকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু রাত ৯টা ১০ মিনিটে তাঁর মা শয্যাতেই মারা যান।

রইসুল কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আপনার মা যদি কাতরায়, আপনি কীভাবে চুপ করে বসে থাকবেন? আমরাও তাই চুপ থাকতে পারিনি।”

হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মোখলেছুর রহমান সরকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “রোগী খুব খারাপ অবস্থায় এসেছিলেন। আমরা অ্যানথ্রাক্স সন্দেহ করেছিলাম, তাঁর শরীরে লিসন (ত্বকে ঘা) ছিল। চিকিৎসা শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু স্বজনেরা গুজব শুনে রোগীকে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। সম্ভবত ওয়ার্ড থেকে বের হওয়ার সময়ই রোগীর মৃত্যু হয়।”

রংপুর ও গাইবান্ধা জেলায় সম্প্রতি অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে একাধিক রোগী শনাক্ত হয়েছেন। রংপুরের পীরগাছার আবদুর রাজ্জাক ও কমলা বেগম নামের আরও দুইজনের স্বজনরাও অভিযোগ করেছেন, রমেক হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসা না পাওয়ার কারণেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে।

রাজ্জাকের স্ত্রী ফেনসী আক্তার বলেন, “স্বামীকে রমেকে ভর্তি করেছিলাম, কিন্তু ঠিকমতো চিকিৎসা পাননি। শেষে তিনিও মারা গেলেন।”

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে দেখা গেছে, অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে অনেক রোগী ভয় ও অনিশ্চয়তার কারণে বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। এতে করে চিকিৎসা সেবার ঘাটতি এবং আতঙ্ক দুই-ই বেড়ে চলেছে।

এদিকে গবাদিপশু নিয়ে খামারি ও কৃষকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক উদ্বেগ। অনেক বাজারে গরু-ছাগলের মাংস বিক্রি কমে গেছে, ফলে ক্ষতির মুখে পড়েছেন মাংস ব্যবসায়ীরা।

সূত্র: প্রথম আলো