।। নিউজ ডেস্ক।।
ছয় দফা দাবিতে আন্দোলনরত পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কমকর্তাদের বৈঠক শেষ হয়েছে। বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়ায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কারিগরি অনুবিভাগ) রেহানা ইয়াছমিনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।
দীর্ঘ তিন ঘণ্টা বৈঠক শেষে কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি মো. মাশফিক ইসলাম বলেছেন, ‘গতকালের সারাদেশে আন্দোলনের প্রেক্ষিতে আজ আমাদের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, শিক্ষা উপদেষ্টাসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে বৈঠক হবে। কিন্তু আজকের বৈঠকে শিক্ষা উপদেষ্টা ও সচিব আমাদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন না।
তিনি বলেন, আমরা আজ অতিরিক্ত সচিবের সাথে বসেছিলাম। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। আজকের এই বৈঠকে আমরা সন্তুষ্ট নই। আমাদের ডেকে তারা কোনো সমাধান দিতে পারেন নি। ফলে আমরা কঠোর কর্মসূচির দিকে যাব। আমাদের দাবি আদায়ের জন্য আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।
শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর (টেক) পদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাধ্যতামূলক ডিপ্লোমা প্রকৌশল ডিগ্রি থাকতে হবে। ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরসহ দেশের কারিগরি সব পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ দিতে হবে।
অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে- কারিগরি (পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রদের জন্য) সব বিভাগীয় শহরে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে। কারিগরি শিক্ষা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কারিগরি শিক্ষা চালু ও শিক্ষক পদে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের চাকরির আবেদনের সুযোগ বাস্তবায়ন করতে হবে। ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের জন্য প্রাইভেট সেক্টরে সর্বনিম্ন বেতন স্কেল নির্ধারণ করে দিতে হবে।
জানা গেছে, বুধবার সকাল ১০ টা থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে জেলায় জেলায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা। বিকেলে তেজগাঁওয় সাতরাস্তা মোড়ে যান কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) শোয়াইব আহমাদ খান। তিনি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। এতে আশ্বস্ত না হয়ে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, প্রত্যেকটি দাবি পূরণে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা লিখিতভাবে জানাতে হবে। সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা বাস্তবায়নের লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।
এছাড়াও চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার ঢাকাসহ সারাদেশে রেলপথ ব্লকেডের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে তারা অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। শিক্ষার্থীদের কঠোর আন্দোলনের কারণে আলোচনায় বসার কথা জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর প্রেক্ষিতে আজ রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন থেকে সরে আসেন শিক্ষার্থীরা। তবে আজকের বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়ায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোনরত শিক্ষার্থীরা।