কোলেস্টেরল শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় একটি লিপিড, যা কোষ গঠনের পাশাপাশি হরমোন উৎপাদন ও লিভারে পিত্ত তৈরিতে সহায়ক। তবে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএলের মাত্রা বেড়ে গেলে তা হৃদরোগের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে।
ভারতের প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নবীন ভামরি বলেন, “২০ বছর বয়সেই প্রত্যেকের কোলেস্টেরল পরীক্ষা করানো উচিত।” তার মতে, সময়মতো পরীক্ষা করলে অল্প বয়সেই প্রয়োজনীয় সতর্কতা নেওয়া সম্ভব হয়।
কারা আগে করাবেন কোলেস্টেরল পরীক্ষা?
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিম্নোক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি গোষ্ঠীর দ্রুত কোলেস্টেরল পরীক্ষা করা উচিত:
- পরিবারের কারও অল্প বয়সে হৃদরোগের ইতিহাস থাকলে
- ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপে ভুগলে
- অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা থাকলে
- ধূমপান করেন বা সেডেন্টারি (বসে থাকা) জীবনযাপন করেন
- নারীদের ক্ষেত্রে, যাদের পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS) আছে
নীরব ঘাতক ‘উচ্চ কোলেস্টেরল’
উচ্চ কোলেস্টেরলের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, এটি কোনো দৃশ্যমান উপসর্গ তৈরি করে না। ফলে অনেকেই তা টের পান না। অথচ সময়মতো না জানলে এর জেরে হৃদরোগ, স্ট্রোকসহ গুরুতর জটিলতা দেখা দিতে পারে।
ডা. ভামরি বলেন, “অল্প বয়সেই সঠিক লাইফস্টাইল গ্রহণ করলে ভবিষ্যতে হৃদরোগ প্রতিরোধ অনেক সহজ হয়ে যায়।”
প্রতিরোধের কার্যকর উপায়
- স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা
- ট্রান্স ফ্যাট ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়ানো
- নিয়মিত ব্যায়াম করা
- ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকা
লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষা কখন করবেন?
প্রথমবার কোলেস্টেরল পরীক্ষাটি উপবাস অবস্থায় লিপিড প্রোফাইল হিসেবে করানো উচিত। যদি সবকিছু স্বাভাবিক থাকে, তাহলে প্রতি ৪-৬ বছর অন্তর এটি পুনরায় করানো উচিত। তবে ঝুঁকি বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বারবার করানো প্রয়োজন।
সংক্ষেপে, কোলেস্টেরল পরীক্ষা এখন আর শুধু সমস্যা দেখা দিলে করানোর বিষয় নয়। এটি স্বাস্থ্য সচেতনতার অংশ। তাই বয়স ২০ পেরোলে দেরি না করে কোলেস্টেরল পরীক্ষা করিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমান আগেভাগেই।