All Bangla News

সিলেট থেকে প্রথম আন্তর্জাতিক কার্গো ফ্লাইট: নতুন দিগন্তের সূচনা

abn
abn

।। নিউজ ডেস্ক।।
সিলেটের এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো সরাসরি আন্তর্জাতিক কার্গো ফ্লাইট চালু হতে যাচ্ছে আগামীকাল, রবিবার। সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে ৬০ টন পণ্য নিয়ে ফ্লাইটটি স্পেনের উদ্দেশ্যে উড়াল দেবে। এর মাধ্যমে দেশের রপ্তানিখাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

কার্গো ফ্লাইটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন উপলক্ষে বিমানবন্দরে বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য ও বেসামরিক বিমান পরিবহন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী। এ ছাড়া বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া ও বেসামরিক বিমান পরিবহন সচিব নাসরীন জাহানও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।

এ সেবাটি চালু হচ্ছে মেক্সিকান কার্গো এয়ারলাইন মাস এয়ার এবং গ্যালিস্টেয়ার-এর যৌথ উদ্যোগে। রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী সামাজিক মাধ্যমে এ উদ্যোগকে বাংলাদেশের সক্ষমতার “নতুন দিগন্ত” হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, “আমরা কারো মুখাপেক্ষী নই—আমরাই পারি, আমরাই গড়ি ভবিষ্যৎ।”

ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পর ওসমানী বিমানবন্দরই প্রথম আরএ-থ্রি প্রটোকল মেনে আন্তর্জাতিক কার্গো ফ্লাইট পরিচালনা করতে যাচ্ছে। ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল হওয়ার পর বাংলাদেশের রপ্তানি যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, সে লক্ষ্যেই দ্রুত এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের একটি দায়িত্বশীল সূত্র।

জানা গেছে, উদ্বোধনী ফ্লাইটে ঢাকার এমজিএইচ গ্রুপ, অরিজিন সলিউশন্সসহ আরও একটি কোম্পানি তাদের পণ্য রপ্তানি করছে। ইতোমধ্যে এসব পণ্য ট্রাকযোগে সিলেটে পৌঁছে গেছে।

ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এক্সপোর্ট কার্গো টার্মিনালটির প্রাথমিক ধারণক্ষমতা ১০০ টন। এখানে আধুনিক এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন সিস্টেম (ইডিএস), ডুয়েল ভিউ স্ক্যানিং মেশিন এবং এক্সপ্লোসিভ ট্রেস ডিটেকশন মেশিনসহ উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে।

বিমানবন্দর পরিচালক হাফিজ আহমদ জানিয়েছেন, ওসমানী বিমানবন্দরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো কার্গো ফ্লাইট ইউরোপের গন্তব্যে যাচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, ভবিষ্যতে কার্গো ফ্লাইটের সংখ্যা আরও বাড়বে। এর আগে, যাত্রীবাহী বিমানের মাধ্যমে সীমিত আকারে কিছু পণ্য রপ্তানি করা হলেও এখন পূর্ণমাত্রার কার্গো ফ্লাইটের মাধ্যমে রপ্তানি কার্যক্রম নতুন মাত্রা পেতে যাচ্ছে।

২০২২ সালেই টার্মিনালটি কার্গো পরিবহনের জন্য উপযুক্ত স্বীকৃতি পেলেও ঢাকায় তখন চাপ কম থাকায় রপ্তানিকারকরা সিলেটমুখী হননি। তবে বর্তমানে শাহজালালে অতিরিক্ত চাপের কারণে বিকল্প রপ্তানি পয়েন্ট হিসেবে সিলেট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন গন্তব্যে পণ্য রপ্তানির জন্য ওসমানী বিমানবন্দরের রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের সার্টিফিকেশনও।

নতুন কার্গো ফ্লাইট চালু হওয়ায় বাংলাদেশের রপ্তানি বানিজ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *