।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
ভারতের সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তির কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদ বলছে, নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত স্থায়ী সালিশি আদালতের (PCA) সাম্প্রতিক রায় প্রমাণ করেছে যে, এই চুক্তি এখনও বৈধ ও আন্তর্জাতিকভাবে কার্যকর রয়েছে, এবং ভারত একতরফাভাবে এটি স্থগিত করতে পারে না।
সোমবার (৩০ জুন) পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, “২৭ জুন আদালতের ঘোষিত রায় পাকিস্তানের অবস্থানকে সমর্থন করেছে। আদালত বলেছে, সিন্ধু পানি চুক্তি বহাল রয়েছে এবং চুক্তিভঙ্গের একতরফা কোনো পদক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয়। ভারত যেন অবিলম্বে চুক্তির স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু করে এবং আন্তরিকভাবে আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালন করে।”
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক ডার এক্স (সাবেক টুইটার)–এ দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, “আদালতের অতিরিক্ত রায় স্পষ্টভাবে দেখিয়ে দিয়েছে যে, কিশেনগঙ্গা ও রাটলে প্রকল্পসংক্রান্ত বিরোধে আদালতের এখতিয়ার আছে। এটি প্রমাণ করে সিন্ধু পানি চুক্তি এখনো পুরোপুরি বৈধ এবং আন্তর্জাতিকভাবে বাধ্যতামূলক। ভারত একতরফাভাবে এ চুক্তি স্থগিত রাখতে পারে না।”
তবে আদালতের রায় প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত। ২৭ জুন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, পাকিস্তানের আপত্তির ভিত্তিতে কিশেনগঙ্গা ও রাটলে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে আদালতের দেওয়া অতিরিক্ত রায় ভারত মেনে নেয় না। দিল্লি দাবি করে, বিরোধ নিষ্পত্তির যে কাঠামো আদালত অনুসরণ করেছে, তা ভারতের গ্রহণযোগ্য নয়।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং এর জেরে সিন্ধু পানি চুক্তির কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত রাখে। পাকিস্তান শুরু থেকেই দাবি করে আসছে, কোনো পক্ষই একতরফাভাবে এই চুক্তি বাতিল বা স্থগিত করতে পারে না।
১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত এই চুক্তি সিন্ধু নদ এবং এর উপনদীগুলোর পানি বণ্টনের বিধান নির্ধারণ করে দেয়। বহু বছর ধরেই দুই দেশের মধ্যে পানি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। পাকিস্তান বলছে, আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি সম্মান জানিয়ে ভারতকে চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।