।। নিউজ ডেস্ক ।।
ঈদের আগে বকেয়া পরিশোধের দাবিতে সচিবালয় অভিমুখে যাওয়া শ্রমিকদের মিছিল পুলিশি বাধা দিয়েছে পুলিশ। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে প্রায় ৪০ জন শ্রমিক ও পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব ও সচিবালয়ের লিংক রোডের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, টানা তিন দিন ধরে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন গার্মেন্টস শ্রমিকরা। সোমবার নয়াপল্টনের সামনে সড়ক অবরোধ করলেও আজ তারা শ্রম ভবন থেকে সচিবালয় অভিমুখে যান। বিজয়নগরের সামনে পুলিশ তাদের প্রথমে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। বাধা উপেক্ষা করে তারা সামনে গেলে পল্টন পার হয়ে তোপখানা রোডে প্রবেশ করতে আবারও পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় শ্রমিকেরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে সংঘর্ষে রূপ নেয়। সংঘর্ষ চলাকালে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা পুলিশের একটি গাড়িও ভাঙচুর করেন।
শ্রমিকরা জানায়, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল ১০টায় শ্রম ভবনের সামনে টি এন জেড অ্যাপারেলস, অ্যাপারেল প্লাস ইকো লিমিটেড, রোর ফ্যাশন, স্টাইল ক্রাফট গার্মেন্টস ও ডার্ড কম্পোজিট টেক্সটাইল লিমিটেডের কয়েকশ শ্রমিক জড়ো হন। বেলা পৌনে ১১টায় তারা মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের দিকে আসতে শুরু করেন। তবে সোয়া ১১টায় তোপখানা রোডে পৌঁছালে মিছিলে বাঁধা দেয় পুলিশ। এক পর্যায়ে শ্রমিকদের ধাওয়া করে সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। পরে তারা আবারও শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান নেন।
সংঘর্ষের পরে শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। বেতন-বোনাস না পেলে ঈদের দিন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও করা হবে।
গার্মেন্টস শ্রমিক টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ বলেন, সচিবালয়ের সামনে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে আমাদের ৩০ থেকে ৩৫ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শ্রমিকদের হামলায় পাঁচজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তারা রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এদের মধ্যে ফজলে রাব্বি নামের এক সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন।
পুলিশ জানায়, সচিবালয় সড়কে ঢুকতে চাইলে নিয়ম অনুযায়ী শ্রমিকদের বাধা দেওয়া হয়। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় শ্রমিকরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ারশেল ছোড়ে এবং তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালিদ মনসুর বলেন, পুলিশের ব্যারিকেড থেকে দূরে থাকতেই শ্রমিকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। এতে আমাদের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন। অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছি, তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছি, পরে তারা যে যার মতো চলে গেছেন।