All Bangla News

পানি ছিটিয়ে শেষ হবে মারমাদের সাংগ্রাই উৎসব

abn
abn

।। নিউজ ডেস্ক।।
বান্দরবানে মারমা জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব ‘সাংগ্রাই’। বান্দরবান, রাঙামাটি এবং খাগড়াছড়ির মারমা জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি কক্সবাজারের রাখাইনদের মাঝেও এই উৎসব পালিত হয়। আগমিী শনিবার মৈত্রী পানি বর্ষণ উৎসবের মধ্য দিয়ে এ উৎসবটির সমাপ্তি ঘটবে।

দিনব্যাপী এই উৎসবে একে অপরকে পানি ছিটিয়ে বন্ধনের বার্তা ছড়িয়ে দেবে মারমা সম্প্রদায়।‘মৈতা রিলং পোয়ে’ নামে পরিচিত এই পানির উৎসবে থাকবে বয়স্ক পূজা, তৈলাক্ত বাঁশে ওঠা, পাহাড়ি পিঠা উৎসব এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।  এদিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি।

মারমা আদিবাসীরা জানান, আগের দিনে তরুণ-তরুণীরা প্রবীণদের পানি দিয়ে স্নান করিয়ে আশীর্বাদ গ্রহণ করতেন। সেই টাকা দিয়ে তৈরি হতো উৎসবের পিঠা। সময়ের সঙ্গে পাল্টেছে উৎসবের ধরন, তবে অপরিবর্তিত রয়েছে তার সৌহার্দ্য ও ঐতিহ্যবাহী তাৎপর্য।

মারমা সমাজের প্রবীণরা জানান, বুদ্ধমূর্তি স্নানের আগে পানি বর্ষণের আয়োজন করা হয় না— এটি একটি ধর্মীয় রীতি। মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণ শিক্ষাবিদরা বলেন, “পানি মারমা সংস্কৃতিতে অত্যন্ত পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ। এটি ধর্মীয় এবং সামাজিক বন্ধনের প্রতীক।”

বাংলাদেশ উদীচি শিল্পীগোষ্ঠীর বান্দরবান জেলা স্যসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ক্যসামং মারমা বলেন, আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে মৈতা রিলং পোয়ে ধারাবাহিকভাবে হয়ে আসছে। এই উৎসবটির উৎপত্তি ১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি, যখন কিছু মারমা যুবক মিয়ানমার থেকে এই ঐতিহ্য দেখে দেশে ফিরিয়ে আনেন। ১৯৭৪ সালে বান্দরবান শহরে প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে মৈত্রী পানি বর্ষণ উৎসব পালিত হয়।

মারমা শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি চথুই প্রু মারমা বলেন, মারমাদের মৈত্রী পানি বর্ষণ উৎসবে “সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে” (এসো হে সাংগ্রাইংয়ে মৈত্রী পানি বর্ষণে) এই গানটি দীর্ঘদিন ধরে উৎসবের প্রধান গান হয়ে আছে। এই গানটির গীতিকার ও সুরকার ছিলেন প্রয়াত উপঞা জোত মহাথের। যিনি উ চ হ্লা ভান্তে নামে অধিক পরিচিত। 

এর আগে ১৫ এপ্রিল জেলা শহরে আনুষ্ঠানিকতা মধ্য দিয়ে সাংগ্রাই উৎসব শুরু হয়েছিল। তবে শহরের বালাঘাটা এলাকার রাজার মাঠে শুরু হয় পরের দিন। শনিবার পানি বর্ষণ উৎসবের মধ্য দিয়ে এ উৎসবটি শেষ হবে।

Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *