।। ডেস্ক রিপোর্ট।।
প্রায়ই প্রেমিক-প্রেমিকা আইনজীবীর চেম্বার বা কোর্টে এসে জানান, তারা “কোর্ট ম্যারেজ” করতে চান। অনেকের ধারণা, শুধু কোর্টে হলফনামা করলেই বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু আইনি প্রক্রিয়া এত সহজ নয়। “কোর্ট ম্যারেজ” নিয়ে ভুল ধারণার কারণে পরবর্তীতে নানা আইনি সমস্যায় পড়তে হয়।
আইনে “কোর্ট ম্যারেজ” নামক কোনো বিধান নেই। এটি শুধু প্রচলিত একটি শব্দ। সাধারণত, নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে হলফনামা করে নোটারি পাবলিক বা প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ঘোষণা করাকে অনেকেই “কোর্ট ম্যারেজ” মনে করেন। কিন্তু এটি শুধু একটি ঘোষণামাত্র, আইনসম্মত বিয়ে নয়।
➤ মুসলিম বিবাহের ক্ষেত্রে:
* প্রাপ্তবয়স্ক পাত্র-পাত্রীর সম্মতিতে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে ধর্মীয় রীতি মেনে বিয়ে করতে হবে।
* বিয়ে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক: বিয়ের ৩০ দিনের মধ্যে নিবন্ধন করতে হবে, নতুবা কাজি ও বরকে জরিমানা বা কারাদণ্ডের শাস্তি হতে পারে।
* কাবিননামা গুরুত্বপূর্ণ: দেনমোহর, ভরণপোষণ ও উত্তরাধিকার নিশ্চিত করতে কাবিননামা থাকা জরুরি। শুধু হলফনামা করলে * বৈবাহিক অধিকার প্রতিষ্ঠা কঠিন।
➤ হিন্দু বিবাহের ক্ষেত্রে:
* হিন্দু রীতিনীতি মেনে প্রাপ্তবয়স্ক পাত্র-পাত্রীর বিয়ে সম্পন্ন করতে হবে।
* বর্তমানে নিবন্ধন ঐচ্ছিক, তবে আইনি সুরক্ষার জন্য নিবন্ধন করানো উচিত।
অনেকেই মনে করেন, কোর্টে হলফনামা করলেই বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ভুল। প্রথমে পারিবারিক আইন মেনে বিয়ে সম্পন্ন করতে হবে, তারপর প্রয়োজন হলে হলফনামা করা যেতে পারে।
আইনজীবী তানজিম আল ইসলাম (সুপ্রিম কোর্ট) বলেন, “কোর্ট ম্যারেজের নামে শুধু হলফনামা করলে তা আইনগতভাবে বৈধ বিয়ে হিসেবে গণ্য হয় না। ধর্মীয় ও আইনি পদ্ধতি মেনে বিয়ে সম্পন্ন করে নিবন্ধন করাতে হবে, নাহলে পরবর্তীতে জটিলতা দেখা দিতে পারে।”
সূত্র: প্রথম আলো।