কুলি হয়ে কাজ করার স্মৃতি মনে করে বললেন—জীবনে প্রথমবার কেঁদেছিলাম
১৪ আগস্ট মুক্তি পেতে যাচ্ছে দক্ষিণি তারকা রজনীকান্ত অভিনীত বহুল আলোচিত সিনেমা ‘কুলি’। লোকেশ কঙ্গরাজ পরিচালিত এই ছবির ট্রেলার প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। আর এই ট্রেলার ও অডিও প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসে পুরোনো দিনের একটি করুণ অধ্যায় স্মরণ করে আবেগতাড়িত হয়ে পড়লেন ৭৪ বছর বয়সী রজনীকান্ত।
ছবিতে রজনীকান্তকেই দেখা যাবে একজন কুলির চরিত্রে। বাস্তব জীবনে এই পেশার সঙ্গে নিজের একসময়ের সংগ্রামী জীবন মেলাতে গিয়ে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি ‘জেলার’ তারকা। ট্রেলার লঞ্চ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন,
‘কুলি হয়ে কাজ করার সময় অনেকবার অপমান সহ্য করেছি। একদিন এক ভদ্রলোক আমাকে দুই রুপি দিয়ে বলল, ওর লাগেজ টেম্পোতে তুলে দিতে। কণ্ঠটা কেমন যেন চেনা লাগছিল। পরে বুঝলাম, সে আমার কলেজের বন্ধু! আমি একসময় ওকে নিয়ে অনেক হাসাহাসি করতাম। সেদিন জীবনে প্রথমবার আমি কেঁদে ফেলেছিলাম।’
এই মুহূর্তে অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেকেই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।
অনুষ্ঠানে আরও অনেক ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও হালকা মজার গল্পে মুগ্ধ করেন দর্শক-সাংবাদিকদের। তিনি বলেন,
‘ভেঙ্কট প্রভু একবার অজিতের জন্য একটা সংলাপ লিখেছিলেন, “কত দিন ভালো মানুষ হয়েই থাকব?” কুলির চরিত্রটা অনেকটা সেরকমই।’
এছাড়া লোকেশ কঙ্গরাজের প্রতি নিজের আগ্রহ ও প্রথম যোগাযোগ নিয়েও বলেন,
“কাইথি” দেখে আমি বুঝে গিয়েছিলাম, এই ছেলেটা অনেক দূর যাবে। আমি নিজেই ওকে ফোন করলাম। জিজ্ঞাসা করলাম—আমার জন্য কোনো গল্প আছে কি না।’
নিজের বয়স ও শারীরিক সীমাবদ্ধতা নিয়েও মজার ছলে বলেন,
‘প্রথম গানে কোরিওগ্রাফার স্যান্ডি বলল, “একেবারে উড়িয়ে দিন।” আমি বললাম, ভাই, আমি ১৯৫০ সালের মডেল, অনেক দৌড়েছি জীবনে। যন্ত্রপাতি বহুবার পাল্টেছে। অত চাপ দিয়ো না, সাবধানে নিয়ো!’
নাগার্জুনার সঙ্গে শুটিংয়ের স্মৃতিও ভাগ করে নেন এই কিংবদন্তি অভিনেতা। বলেন,
‘শুটিংয়ে গিয়ে দেখি, নাগার্জুনা এখনো আগের মতোই। চুল এখনো ঘন কালো! আর আমারটা? সব উধাও! জিজ্ঞেস করলাম রহস্য কী? বলল—ব্যায়াম!’
সব মিলিয়ে ‘কুলি’র ট্রেলার লঞ্চ অনুষ্ঠানে একদিকে যেমন রজনীকান্তের সহজ-সাবলীল কথায় হাসির রোল পড়ে, তেমনি তার জীবনসংগ্রামের স্মৃতিতে উপস্থিত সবাই আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। সিনেমাটি মুক্তির আগেই তাই দর্শকদের মাঝে তৈরি হয়েছে অন্যরকম এক সংযোগ—রজনীকান্তের জীবনের সত্য গল্পের সঙ্গে রূপালি পর্দার গল্প যেন একসূত্রে বাঁধা পড়ে গেছে।