আমাদের সারিবদ্ধ লাইন লম্বা হয়ে গেছে। যারা আছি সবাই নবাগত ছাত্র ছাত্রী। হাজারো স্বপ্ন নিয়ে টরেন্টো পিয়ারসন এয়ারপোর্টের প্রবেশপথে অফিসারের মুখোমুখি হতে যাচ্ছি। সামনে কি সময় অপেক্ষা করছে কেউ জানি না! যদি কোন গড়বড় হয় এখান থেকেই ফিরতি বিমানে সোজা নিজ নিজ দেশে ফেরত চলে যেতে হবে! স্বপ্নের সূচনালগ্নেই নিদারুণ পরিসমাপ্তি।
এক কর্মকর্তা ক্রমাগত পায়চারি করছিলেন এবং সবাইকে আইইএলটিএস এর সার্টিফিকেটটা সাথে রাখতে বলছিলেন। ইমিগ্রেশন অফিসার চেক করবেন। (এটা ওইদিন আমাদের সাথে হয়েছিল, ব্যতিক্রমী ঘটনা)। ওই লোককে বেশ নিষ্ঠুর মনে হয়েছিল আমার। এক ছাত্রের পায়ে আঘাতজনিত কারণে দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হচ্ছিল। তখন ওই লোককে বলতে শোনা গিয়েছিল, “কষ্ট হলে হবে, এখানে কারও বসার কোন সুযোগ নেই!” অভিবাসীদের স্বাগত জানানোর দেশ কানাডার সেই বন্ধুপ্রতিম চিত্র অনেকখানি বিবর্ণ হয়ে পড়েছে অনেকের চোখে। মনে অজানার আশংকা ভর করেছে।
ওইসময় পাশাপাশি মোট তিনজন অফিসার কাগজপত্র যাচাই-বাছাইর কাজ করছিলেন। আমার বাকি দুই পাশের দুইজন ছাত্রকেই নানান প্রশ্নবাণে জর্জরিত করে অফিসাররা দাঁড় করিয়ে রেখেছেন। কি কারণ জানা নেই। শুধু এটাই দেখেছি ওদেরকে বলা হয়েছিল, ওরা যেন নিজেদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কল করে কোন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেন অফিসারকে। তিনি কথা বলতে চান!
আমার ছাড়পত্র হাতে চলে এসেছে- এটাকে স্টাডি পারমিট বলে। রওয়ানা হলাম। যেতে যেতে পাশের দুজনের অসহায় মুখ দেখতে পেলাম! জানি না সত্যিই ওইদিন ওদের সাথে কি হয়েছিল? ওরা কি আদৌও টরেন্টো বর্ডার পার হতে পেরেছিল? আপনারা ভাবছেন জাদুঘরের কথা না বলে কেন এসব লিখেছি?