।। নিউজ ডেস্ক।।
ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্ককে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করতে হলে অতীতের অমীমাংসিত বিষয় সমাধানের বিকল্প নেই। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘পদ্মা’য় আয়োজিত দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে পাকিস্তানকে এমন বার্তা দিয়েছে বাংলাদেশ।
বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন বলেন, একাত্তরে গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে বলেছে বাংলাদেশ। এছাড়া স্বাধীনতা পূর্ব সম্পদ হিসেবে ৪২০ কোটি ডলার ফেরত চেয়েছে ঢাকা। এ নিয়ে ইসলামাবাদ আলোচনায় রাজি হয়েছে বলেও জানান পররাষ্ট্র সচিব।
বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন এবং পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ তাদের নিজ নিজ পক্ষের নেতৃত্ব দেন। বৈঠককালে দুদেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলোর সামগ্রিক দিক বিশেষ করে বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেন। এতে পাকিস্তান-বাংলাদেশ সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে উভয়পক্ষ।
বৈঠকে দু’দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার আলোচনা ছাড়াও গুরুত্ব পেয়েছে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি। এছাড়াও আলোচনার টেবিলে ছিল যোগাযোগ, পরিবহণ, শিক্ষা ও কৃষিসহ অন্যান্য ইস্যু। ভবিষ্যতে দু’দেশের যোগাযোগ বাড়িয়ে বাণিজ্যিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে আলোচনাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে উভয়পক্ষ।
বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় আলোচনা ফলপ্রসূ হওয়ার বার্তা দিয়েছেন আমনা বালুচ। কেমন আলোচনা হয়েছে, গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি সংক্ষেপে জবাব দিয়েছেন ‘নাইস’।
এদিকে দীর্ঘ সময় পর দুই দেশের মধ্যে এমন আলোচনাকে ইতিবাচক অবস্থান থেকে দেখছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, ইসলামাবাদের সঙ্গে ঢাকার বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে দুই দেশকেই মনোযোগী হতে হবে। পাকিস্তান পররাষ্ট্র সচিবের বাংলাদেশ সফর দেশের জন্য ইতিবাচক। অর্থনীতিকে যেহেতু আমরা গতিশীল করতে চাচ্ছি, তাই এই আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ।
উল্লেখ্য, প্রায় ১৫ বছর পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের আলোচনা ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সর্বশেষ ২০১০ সালের নভেম্বরে ইসলামাবাদে বৈঠক হয়েছিল। এছাড়াও চলতি মাসের শেষের দিকে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ঢাকা সফর করবেন বলে জানা গেছে। ২০১২ সালের পর বাংলাদেশে এটিই হবে কোনো পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম সফর।