।। নিউজ ডেস্ক ।।
বাংলাদেশে যেকোনো মূল্যে যুক্তরাষ্ট্রের ইলন মাস্কের স্টার লিংক ইন্টারনেট সেবা নিয়ে আসা হবে বলে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক করে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিতে বলেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক লেখক ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। রোববার (৯ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে ‘দ্রুতগতির মানসম্পন্ন ও সহজলভ্য ইন্টারনেট প্রাপ্তিতে করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশে এলএলসি দ্বারা পরিচালিত উপগ্রহ-ভিত্তিক ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক স্টারলিঙ্ক সার্ভিসেস চালু করতে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করা হয়েছে জানিয়ে বলেন, আমরা যেকোনো মূল্যে স্টার লিংক বাংলাদেশে নিয়ে আসবো। এটা আমাদের পলিটিক্যাল প্রমিস। এ প্রমিসের মাধ্যমে আমরা বিশ্বকে দেখাতে চাইবো যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ বান্ধব দেশ। এফডিআইকে ব্র্যান্ডিং করার জন্য আমরা এ কাজটি করব।
বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন নন-জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট অরবিট সেবার জন্য একটি নীতিমালা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। সরকার স্টারলিংকসহ টেক-জায়ান্ট কোম্পানিগুলো জায়গা দিতে প্রস্তুত। এই জন্য এর লাইসেন্সের যে বিধিবিধান আছে, সেইগুলোকে সহজ করা হয়েছে। লাইসেন্স ফী একেবারে সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা হয়েছে।”
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বর্তমানে প্রচলিত ইন্টারনেট ব্যবস্থার একটি কার্যকর বিকল্প হিসেবে স্টারলিংক চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি ডিজিটাল প্রযুক্তির উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি শিক্ষা, ব্যবসা, স্বাস্থ্যসেবা ও ফ্রিল্যান্সিংসহ অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সুযোগ সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্টারলিংকের মতো নন-জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট প্রযুক্তির মূল সুবিধা হলো উচ্চগতির, তারবিহীন ও নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ। যা দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ব্যবহার করা সম্ভব। বর্তমানে দেশের অনেক দ্বীপ, চর, পাহাড়ি এলাকা ও গভীর বনাঞ্চলে ফাইবার অপটিক ক্যাবল বা মাইক্রোওয়েভ প্রযুক্তির মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া কঠিন। এসব এলাকায় স্টারলিংক সহজেই ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে পারবে, যা সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করবে।
বাংলাদেশে সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “বাংলাদেশে স্টারলিংক নিয়ে আসার ব্যাপারে স্পেসএক্স মালিক ইলন মাস্কের সঙ্গে এক ভিডিও আলোচনায় বাংলাদেশে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালুর বিষয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
স্টারলিঙ্ক সার্ভিসেস বাংলাদেশে চালু হলে প্রযুক্তি, অর্থনীতি, ই-লার্নিং, শিল্পখাত এবং নারীর ক্ষমতায়নে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে দুর্যোগকালীন সময়ে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এছাড়া, বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়ার ফলে ইন্টারনেট সেবার দামও কমতে পারে।