।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
তিন দিনের সফরে মালয়েশিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। দীর্ঘ এক দশক পর শি জিনপিংয়ের এই প্রথম মালয়েশিয়া সফর। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার তিন দেশ সফরের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি কুয়ালালামপুরে পৌঁছান। বুধবার মালয়েশিয়ার স্বর্ণগম্বুজ বিশিষ্ট রাজপ্রাসাদে এক বর্ণাঢ্য আয়োজনে রাজা সুলতান ইব্রাহিম শিকে স্বাগত জানান।
এর আগে তিনি ভিয়েতনামে সফরকালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে শুরু করে রেল অবকাঠামো উন্নয়ন পর্যন্ত নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতার চুক্তি সম্পন্ন করেছেন। বুধবার আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
মালয়েশিয়ায় পা রাখার পর প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, দ্বিপাক্ষিক উচ্চ পর্যায়ের কৌশলগত সহযোগিতা শুধু চীন-মালয়েশিয়ার জন্য নয়, বরং এই অঞ্চলের ও বিশ্বের শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। কুয়ালালামপুরে চীনা দূতাবাসের দেওয়া এক বিবৃতিতে শি বলেছিলেন, ‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমাদের যৌথ প্রচেষ্টায় এই সফর ফলপ্রসূ হবে।’
মালয়েশিয়ার সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাজরি আবদুল আজিজ বলেন, এই সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এটা চীনের পক্ষ থেকে একটি কৌশলগত বার্তা—তারা নির্ভরযোগ্য বাণিজ্যিক অংশীদার। আমরা কখনোই চীনের সঙ্গে লেনদেনে সমস্যা দেখিনি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সময়ে মালয়েশিয়া চীনের আরও কাছাকাছি চলে এসেছে। দীর্ঘমেয়াদে মার্কিন প্রভাব কমে যাবে বলেই মনে হচ্ছে। চীন বর্তমানে মালয়েশিয়ার সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সফরগুলো স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে—চীনই এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি নির্ভরযোগ্য বাণিজ্যিক অংশীদার। আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধে লিপ্ত চীনের তরফ থেকে আসিয়ান দেশগুলোকে ওয়াশিংটনের তুলনায় বেইজিংই অধিক বিশ্বস্ত ও লাভজনক অংশীদার।
সফরের তিন দেশের মধ্যে চীনের দৃষ্টিকোণে মালয়েশিয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। চীন-মালয়েশিয়া অর্থনৈতিক সম্পর্ক শুধু দ্বিপাক্ষিক নয়, বরং বৃহত্তর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রভাব কাঠামোতেও গুরুত্বপূর্ণ। চীনের চায়না প্লাস ওয়ান কৌশলের অংশ হিসেবে মালয়েশিয়ায় চীনা বিনিয়োগ ও কারখানা স্থাপন বাড়ছে।
গত বছর চীন ও মালয়েশিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে। উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ, যদিও দক্ষিণ চীন সাগরের কিছু অংশ নিয়ে উভয়ের দাবি রয়েছে। গত ১৬ বছর ধরে চীন মালয়েশিয়ার সর্ববৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদার। মালয়েশিয়ার বৈদেশিক মন্ত্রণালয় জানায়, গত বছর দুই দেশের মোট বাণিজ্য মালয়েশিয়ার বৈশ্বিক বাণিজ্যের ১৬.৮ শতাংশ ছিল।